Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চগড় জোন

পঞ্চগড় জোন
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট

পঞ্চগড় জেলার অন্তর্গত বাংলাদেশের সর্বোত্তরের উপজেলার নাম তেঁতুলিয়া। তেঁতুলিয়া উপজেলার ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট (ইধহমষধনধহফযধ তবৎড় চড়রহঃ) এবং বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের অবস্থান। হিমালয়ের কোল ঘেঁষা মহানন্দা নদীর তীরে ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী প্রায় ১০ একর জমিতে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট অর্থাৎ বাংলাবান্ধা স্থল বন্দর নির্মাণ করা হয়। বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের মাধ্যমে ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
 
বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট গেলে কংক্রিট দিয়ে নির্মিত বিশালাকৃতির একটি জিরো চোখে পড়বে। বলা যায় বাংলাদেশের সীমানে এই জিরো পয়েন্ট থেকেই শুরু হয়েছে। এখানকার চারপাশ সবুজে ঢাকা এবং খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, যা যেকারো মন ভাল করে দেয়ার জন্য যথেষ্ঠ। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ফটকের কাছে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের জাতীয় পতাকা টানানো থাকে। যদিও অনুমতি ছাড়া সেখানে প্রবেশ করা যায় না।
বাংলাবান্ধা থেকে ভারতের শিলিগুড়ি শহরের দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার এবং দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের কাকরভিটা সীমান্তের দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। পর্যটকেরা বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট দিয়ে সড়কপথে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান যাতায়াত করে। ফলে পঞ্চগড় জেলা পর্যটকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি তেঁতুলিয়া যেতে চাইলে হানিফ বাসে যাওয়া যাবে। নন এসি বাস ভাড়া জনপ্রতি ৬৫০-৭০০ টাকা। এছাড়া পঞ্চগড় হয়ে তেতুলিয়া যেতে পারবেন।

ঢাকার শ্যামলী, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও মিরপুর থেকে নাবিল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইস, তানযিলা ট্রাভেল, বরকত ট্রাভেল এ পঞ্চগড় যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে পঞ্চগড় নন এসি বাস ভাড়া ৫৫০-৭০০ টাকা এবং এসি বাস ভাড়া ৮০০-১৬০০ টাকা।
ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকার কমলাপুর থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে পঞ্চগড় আসতে পারেন। শ্রেণী অনুযায়ী ট্রেন টিকেটের ভাড়া জনপ্রতি ৩৬৫ থেকে ১২৫৪ টাকা পর্যন্ত।
পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ায় পথে সারাদিন নিয়মিত বিরতিতে লোকাল বাস চলাচল করে। বাসের টিকেটের মূল্য জনপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তেঁতুলিয়া বাজারে নেমে ব্যাটারি চালিত অটোতে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট আসতে পারেন। 
কোথায় থাকবেন
তেঁঁতুলিয়ায় কাজী ব্রাদার্স হোটেল ও সীমান্তের পাড় নামে দুইটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে নন এসি রুম ভাড়া ৬০০-৮০০ টাকা ও এসি ডাবল বেডের ভাড়া ১০০০-১৫০০ টাকা।
মহানন্দা নদী তীরের ডাকবাংলোতে থাকতে চাইলে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। ডাকবাংলোর প্রতি কক্ষের ভাড়া ৪০০ টাকা। বন বিভাগের রেস্টহাউস এবং বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষ্যে থাকতে পারবেন।
তেঁতুলিয়া ডাক বাংলো

পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে ভারতের সীমান্তবর্তী মহানন্দা নদীর তীর ঘেঁষে ঐতিহাসিক তেঁতুলিয়া ডাক বাংলো (ঞবঃঁষরধ উধশ ইঁহমধষড়)ি অবস্থিত। ভিক্টোরিয়ান রীতিতে কুচবিহারের রাজা ভূমি থেকে প্রায় ১৫-২০মিটার উঁচু গড়র উপর এই ডাক বাংলোটি নির্মাণ করেছিলেন। বর্ষাকালে তেঁতুলিয়া ডাক বাংলো থেকে মহানন্দা নদীর অপূর্ব সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
 
এছাড়া এই স্থান থেকে হেমন্ত ও শীতকালে পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার চুড়া দেখা যায়। বর্তমানে জেলা পরিষদের অধীনে থাকা তেতুলিয়া ডাক বাংলোটিতে একটি পিকনিক কর্ণার নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের কাছে এই ডাক বাংলোটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়।

কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি তেঁতুলিয়া যেতে চাইলে হানিফ বাসে যাওয়া যাবে। নন এসি বাস ভাড়া জনপ্রতি ১০০০ টাকা। এছাড়া পঞ্চগড় হয়ে তেতুলিয়া যেতে পারবেন। তেঁতুলিয়া বাজারে নেমে সেখান থেকে স্থানীয় পরিবহনে চড়ে তেতুলিয়া ডাক বাংলোতে যেতে পারবেন।

ঢাকার শ্যামলী, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও মিরপুর থেকে নাবিল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইস, তানযিলা ট্রাভেল, বরকত ট্রাভেল এ পঞ্চগড় যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে পঞ্চগড় নন এসি বাস ভাড়া ৮০০-৯৫০ টাকা এবং এসি বাস ভাড়া ১১০০-১৭০০ টাকা।

ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকার কমলাপুর থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে পঞ্চগড় আসতে পারেন। শ্রেণী অনুযায়ী ট্রেন টিকেটের ভাড়া জনপ্রতি ৫৫০ থেকে ১৯৪২ টাকা পর্যন্ত।

কোথায় থাকবেন
জেলা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে তেতুলিয়া ডাক বাংলোয় রাত্রিযাপন করা যায়। এছাড়া পঞ্চগড় শহরে রাতে থাকার আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল মৌচাক, হোটেল রাজ নগর, হিলটন বোর্ডিং, রোকখানা বোর্ডিং, হোটেল প্রীতম, হোটেল এইচ কে প্যালেস ও হোটেল ইসলাম উল্লেখযোগ্য।


কোথায় খাবেন
তেঁতুলিয়া উপজেলায় হালকা চা-নান্তা ও সাধারণ বাঙ্গালী খাবারের হোটেল রয়েছে। তবে পঞ্চগড় শহরে হোটেল করোটিয়া, হোটেল মৌচাক, হোটেল নিরিবিলি, হোটেল হাইওয়ে ও হোটেল হামজার মতো বেশ কয়েকটি  ভালোমানের হোটেল আছে।

মহারাজার দিঘী
পঞ্চগড় জেলা সদর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অমরখানা ইউনিয়েন অবস্থিত এক ঐতিহাসিক পুকুরের নাম মহারাজার দীঘি (গধযধৎধলধৎ উরমযর)। ধারণা করা হয়ে, ভিতরগড় নামের ১৫০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহাসিক এক রাজ্যে মহারাজা পৃথু রাজত্ব করাকালীন এই দীঘিটি খনন করেন।
 
বিশালায়তনের স্বচ্ছ পানির এই জলাশয়ের পাড় সহ মোট আয়তন প্রায় ৮০০  ৪০০ গজ এবং পানির গভীরতা প্রায় ৪৫ ফুট। গাছগাছালিতে ঘেরা মহারাজার দীঘির চারপাশে প্রায় ১০টি ঘাট রয়েছে। কথিত আছে, পৃথু রাজা তার পরিবার পরিজন ও ধনরতœ সাথে নিয়ে “কীচক” নামক এক নিম্নশ্রেণী দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়ে তাদের সংস্পর্শে ধর্মনাশের ভয়ে এই দীঘিতে আতœহনন করেছিলেন।

প্রতিবছর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে মহারাজার দীঘির পায়ে এক বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়। সে সময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও দর্শনার্থীরা মেলায় ঘুরতে আসেন।

কিভাবে যাবেন
ঢাকার শ্যামলী, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও মিরপুর থেকে নাবিল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইস, তানযিলা ট্রাভেল, বরকত ট্রাভেল এ পঞ্চগড় যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে পঞ্চগড় নন এসি বাস ভাড়া ৫৫০-৭০০ টাকা এবং এসি বাস ভাড়া ৮০০-১৬০০ টাকা।

ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকার কমলাপুর থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে পঞ্চগড় আসতে পারেন। শ্রেণী অনুযায়ী ট্রেন টিকেটের ভাড়া জনপ্রতি ৩৬৫ থেকে ১২৫৪ টাকা পর্যন্ত।

পঞ্চগড় বাস টার্মিনাল থেকে তেঁতুলিয়া/বাংলাবান্ধাগামী বাসে বোর্ড বাজার এ নেমে রিক্সা বা ব্যাটারি চালিত অটো করে যাওয়া যায়। এছাড়া পঞ্চগড় থেকে প্রাইভেটকার/মাইক্রো ভাড়া করে সারাদিনের জন্যে ঘুরতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন
পঞ্চগড় শহরে অবস্থিত আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল মৌচাক, হোটেল রাজ নগর, হিলটন বোর্ডিং, রোকখানা বোর্ডিং, হোটেল প্রীতম, হোটেল এইচকে প্যালেস, হোটেল ইসলাম প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সার্কিট হাউজ ও জেলা পরিষদের ডাক বাংলোয় যোগাযোগ করে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

কোথায় খাবেন
পঞ্চগড় শহরে হোটেল করোটিয়া, হোটেল মৌচাক, হোটেল নিরিবিলি, হোটেল হাইওয়ে ও হোটেল হামজার মতো ভাল মানের খাবার হোটেল রয়েছে।

ভ্রমণ পরামর্শ
অযাচিত ঝামেলা এড়াতে দীঘির ডান দিকে অবস্থিত বনের গভীরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
পুরো জায়গাটি ঘুরে দেখতে ২-৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। প্রয়োজনে সাথে শুকনো খাবার ও পানি পরিবহণ করুন।