Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪

রংপুর জোন

রংপুর জোন
তাজহাট জমিদার বাড়ি
তাজহাট জমিদার বাড়ি (ঞধলযধঃ চধষধপব) দেখতে হলে রংপুর বিভাগীয় শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে মাহিগঞ্জের তাজহাট গ্রামে যেতে হবে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে রতœ ব্যবসায়ী মান্নালাল ব্যবসায়িক কারণে মাহিগঞ্জে এসে বসবাস এবং পরবর্তীতে তাজহাট জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা করেন। জমিদার মান্নালাল মারা যাবার পর তাঁর দত্তক পুত্র গোপাল লাল রায় বাহাদুর জমিদারি পরিচালনা শুরু করেন। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে প্রায় ২০০০ রাজমিস্ত্রির নিরলস পরিশ্রমে বর্তমান তাজহাট জমিদার বাড়ি পূর্ণতা লাভ করে। ১৯১৭ সালে সম্পূর্ণ হওয়া এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করতে তৎকালীন সময়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ হয়।


 
তাজহাট জমিদার বাড়ির চত্বরে রয়েছে গাছের সারি, বিশাল মাঠ এবং প্রাসাদের দুই পাশে আছে দুইটি পুকুর। আর আছে বিভিন্ন রকম ফুল ও মেহগনি, কামিনী, আম এবং কাঁঠাল বাগান। জমিদার বাড়িটি দেখতে ঢাকার আহসান মঞ্জিলের মতো। লাল ইট, শ্বেত ও চুনা পাথর দ্বারা নির্মিত চারতলা বিশিষ্ট তাজহাট জমিদার বাড়ির তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় জমিদার গোপালের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস রাখা আছে। এছাড়া রয়েছে থাকার কক্ষ, গোসলখানা ও অতিথিদের জন্য কক্ষ। প্রায় ২১০ ফুট প্রস্থের প্রাচীন মুঘল স্থাপত্যের অনুকরণে নির্মিত তাজহাট জমিদার বাড়িতে ইতালীয় মার্বেল পাথরে তৈরী ৩১ টি সিঁড়ি আছে। রাজবাড়ীর পেছনদিকে রয়েছে গুপ্ত সিড়ি পথ, যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ প্রতœতত্ত্ব বিভাগ তাজহাট জমিদার বাড়িকে সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে নথিভুক্ত করে এবং ২০০৫ সালে রংপুর জাদুঘরকে তাজহাট জমিদার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তরিত করে। জাদুঘরের প্রদর্শনী কক্ষে দশম ও একাদশ শতাব্দীর বেশকিছু টেরাকোটা শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। এছাড়াও জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে মুঘল সম্রাট আওরাঙ্গজেবের সময়ের কুরআন, মহাভারত ও রামায়ণসহ বেশকিছু আরবি এবং সংস্কৃত ভাষায় লেখা প্রাচীন পান্ডুলিপি। কাল পাথরের বিষ্ণুর প্রতিকৃতি ছাড়াও জাদুঘরে প্রায় ৩০০ টি মূল্যবান নিদর্শন রয়েছে।

তাজহাট জমিদার বাড়ি ও রংপুর জাদুঘর পরিদর্শনের সময়সূচী
রংপুর জাদুঘর তথা তাজহাট জমিদার বাড়ি সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। দুপুর ১ টা থেকে ১ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত রংপুর জাদুঘরে মধ্যাহ্ন বিরতির বন্ধ থাকে।

সপ্তাহের প্রতি রবিবার পূর্ণ দিবস, সোমবার অর্ধ দিবসের জন্য জাদুঘরটি বন্ধ থাকে। এছাড়াও সমস্ত সরকারি ছুটির দিনগুলোতে জাদুঘরটিতে পরিদর্শন বন্ধ থাকে। শুক্রবার দুপুর ১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত মূল গেইট থেকে সম্পূর্ন জমিদারবাড়ি 
বন্ধ থাকে।


তাজহাট জমিদার বাড়ি ও রংপুর জাদুঘর প্রবেশের টিকেট মূল্য
প্রাপ্তবয়স্ক সকল বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য রংপুর জাদুঘরে প্রবেশ করতে ৩০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের তাজহাট জমিদার বাড়ি প্রবেশ করতে ১০ টাকা দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়, তবে ৫ বছরের কম বাচ্চাদের প্রবেশ করতে কোন টিকেট লাগে না। এছাড়া সার্কভুক্ত দেশের দর্শনার্থীর প্রবেশের টিকেট মূল্য ২০০ টাকা এবং অন্য যেকোন বিদেশীদের প্রবেশ টিকেটের মূল্য ৪০০ টাকা।

কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল হতে নিয়মিত ভাবে বিভিন্ন পরিবহণের বাস রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এসব বাসে চড়ে রংপুর যেতে জনপ্রতি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা ভাড়া লাগে। রংপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে রিকশাযোগে তাজহাট জমিদার বাড়ি যেতে মাত্র ৫০ টাকা ভাড়া লাগে। তবে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামগামী বাসে চড়লে সরাসরি তাজহাট জমিদার বাড়ির সামনে নামা যায়।
রংপুরে কোথায় থাকবেন
রংপুর শহরে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের বেশকিছু হোটেল/মোটেল রয়েছে। একটু খোঁজ খবর নিয়ে নিজের পছন্দমত হোটেলে সহজেই রাত্রি যাপন করতে পারবেন। রংপুরে উল্লেখযোগ্য হোটেলের মধ্যে রয়েছে
হোটেল নর্থভিউ: ০১৭৬৬-২১২১৩৯, ০২৫৮৯৯-৬৪৫৭২, পর্যটন মোটেল: ০২৫৮৯৯-৬২১১০, ০১৭১২-৬৮২৯৩৯ দি পার্ক হোটেল: ০২৫৮৯৯-৬৪৬১৬, হোটেল গোল্ডেন টাওয়ার: ০১৭১৮-৪০৯৬৯২, হোটেল তিলোত্তমা: ০২৫৮৯৯-৬৭৬৬৫, ০১৭১৮৯৩৮৪২৪, ০১৭৪৪-৫১৩১৭১ হোটেল ক্যাসপিয়া: ০১৯৭৭-২২৭৭৪২, ০১৮১৯-৯২৭৭৩১

কোথায় খাবেন
বিভাগীয় শহর রংপুরে বিভিন্ন মানের হোটেল/রেস্টুরেন্ট থেকে নিজের আহার সেরে নিতে পারবেন তবে আমের সিজনে রংপুর গেলে রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম খেতে ভুল করবেন না।

 

ভিন্নজগত পার্ক
বিভাগীয় শহর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার খলেয়া গুঞ্জিপুর এলাকার প্রায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে ২০০১ সালে স্থাপিত হয়েছে ভিন্নজগত বিনোদন কেন্দ্র (ঠরহহড়লড়মড়ঃ অসঁংবসবহঃ চধৎশ)। ভিন্নজগৎ এর দেশি বিদেশি হাজারো বৃক্ষে নানা প্রজাতির পাখির কোলাহলে মুখর হয়ে থাকে। ভিন্নজগতে রয়েছে বাংলাদেশের প্রথম প্লানেটোরিয়াম, ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য সায়েন্স পার্ক, রোবট স্ক্রিল জোন, জল তরঙ্গ, স্পেস জার্নি, আজব গুহা, সি প্যারাডাইস, শাপলা চত্বর, নৌকা ভ্রমণ, ওয়াক ওয়ে, বীরশ্রেষ্ঠ এবং ভাষা সৈনিকদের ভাস্কর্য, থ্রিডি মুভি, মেরি গো রাউন্ড, ফ্লাই হেলিকপ্টার, লেক ড্রাইভ, সুইমিং পুল, মাছ ধরার ব্যবস্থা এবং স্পিনিং হেড।
 
শিশুদের বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণির মুর্তি। ভিন্নজগতে রয়েছে একই সঙ্গে ৫০০ জনের বিভিন্ন পৃথক দলের আলাদা পিকনিক করার ব্যবস্থা। প্রায় ৯০০ গাড়ির পার্কিংয়ের সুবিধা, ৭ টি কটেজ, থ্রি স্টার মানের ড্রিম প্যালেস হোটেল। এছাড়াও ভিন্নজগতের জলাশয়গুলোতে নৌভ্রমণের সুবিধা এবং নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। যা ভিন্নজগতকে উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ভিন্নজগতে প্রবেশ মূল্য
ভিন্নজগতে প্রবেশ করতে জনপ্রতি ১০০ টাকা দিয়ে প্রবেশ টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। এছাড়া ভেতরের প্রতিটি রাইড উপভোগের জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ চালু আছে।
বাস প্রবেশ মূল্য-৪০০০, মাইক্রোবাস-১০০০, প্রাইভেটকার-৫০০, অটোরিক্সা-৮০০ টাকা।

কিভাবে যাবেন
বাসে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর, মহাখালী, গাবতলী এবং কল্যাণপুর থেকে রংপুর যাওয়ার এসি ও নন-এসি বাস যাতায়াত করে। ঢাকা থেকে রংপুর যেতে বাসের মানভেদে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ভাড়া লাগে।
প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন
গ্রিনলাইন পরিবহন: ৮৮-০২-৯১১২২৮৭, ৮৮-০২-৯১৩৩১৪৫, ০১৭৩০০৬০০০৬, ০১৭৩০০৬০০১৩
আলহামরা ট্র্যাভেলস: ৮৮-০২-৯০০৫৬১২, ০১৭২১৮০২০৩১
মীম পরিবহন ০১৯১১-০১৩৬৯৪, ০১৭৩৪৪২২৯৭১
এস আর ট্র্যাভেলস: কল্যাণপুর ০১৭১১৩৯৪৮০১, ৮৮-০২-৯০৩৩৭৯৩, গাবতলি  ৮৮-০২-৯০৩১২২৬, মহাখালি  ০১৫৫২-৩১৫৮৩১, উত্তরা ০১৭১১-৩৯৪৮০৪
কুড়িগ্রাম পরিবহন ০১৯২৪৪৬৯৪৩৭, ০১৯১৪৮৫৬৮২৬

ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সোমবার ছাড়া সপ্তাহের ৬ দিন সকাল ৯ টা ছেড়ে যায়। রংপুর যেতে ২০০ থেকে ৭০০ টাকা ট্রেন ভাড়া লাগে।

রংপুর থেকে ভিন্নজগত
রংপুর থেকে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস কিংবা ইজিবাইকে সরাসরি ভিন্নজগতে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ভিন্নজগত যেতে প্রাইভেটকারের ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকে ভিন্নজগতে যেতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা লাগে। চাইলে রংপুরের পাগলাপীর বাস স্ট্যান্ড হতে সৈয়দপুর কিংবা দিনাজপুরগামী গাড়িতে চড়ে ভিন্নজগতে যেতে পারবেন।

আবাসিক ব্যবস্থা
চাইলে ভিন্নগজতের ড্রিম প্যালেসে রাত্রি যাপন করতে পারবেন। থ্রি স্টার মানের ড্রিম প্যালেসে প্রতি রাত যাপনের জন্য আপনাকে ১০০০ থেকে ৫০০০ টাকা গুনতে হবে। এছাড়া থাকতে পারেন রংপুরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে। রংপুরে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে মৌসুমের চাহিদা অনুযায়ী মূল্য নেওয়া হয়ে থাকে।

হোটেল নর্থভিউ: ০১৭৬৬-২১২১৩৯, ০২৫৮৯৯-৬৪৫৭২, পর্যটন মোটেল: ০২৫৮৯৯-৬২১১০, ০১৭১২-৬৮২৯৩৯ দি পার্ক হোটেল: ০২৫৮৯৯-৬৪৬১৬, হোটেল গোল্ডেন টাওয়ার: ০১৭১৮-৪০৯৬৯২, হোটেল তিলোত্তমা: ০২৫৮৯৯-৬৭৬৬৫, ০১৭১৮৯৩৮৪২৪, ০১৭৪৪-৫১৩১৭১ হোটেল ক্যাসপিয়া: ০১৯৭৭-২২৭৭৪২, ০১৮১৯-৯২৭৭৩১